গল্প গুলো শেষ করার পর আমি একটি কথাই বলেছি যে গল্পটা Just Awesome
তাই আজকে আমি আপনাদেরকে আমার প্রিয় ৩ টি গল্প বলব।
গল্প -১
ভারতের আদিত্য বিরলা গ্রুপ স্বনামধন্য এক প্রতিষ্ঠানের নাম। একবার এক ম্যানেজারের ভুল সিদ্ধান্তের কারনে ক্ষতি হয়ে যায় মিলিয়ন ডলার। বিনিয়োগকারীরা সকল দিক থেকে চাপ দিচ্ছিল এই গ্রুপের চেয়ারম্যানকে। ম্যানেজার মনে মনে বলছিল "এই বার আমার চাকরি আর থাকবে না।"
এমন সময় চেয়ারম্যান তাকে ডেকে পাঠায়। ম্যানেজার ভয়ে ভয়ে সেখানে যায়।
চেয়ারম্যান তাকে দেখে বলে, "তুমি ভয় পাচ্ছ কেন? তোমার চাকরি চলে যাবে বলে?"
ম্যানেজার আস্তে মাথা নেড়ে, সম্মতি দেয়।
এটা দেখে চেয়ারম্যান মুচকি হেসে তাকে বলে, "দেখ, তোমার একটি ভুলের কারনে আমরা মিলিয়ন ডলার হারিয়েছি কিন্তু অতীতে তোমারই কিছু ভাল সিদ্ধান্তের কারনে আমার অনেক মিলিয়ন ডলারের প্রফিটও তো করেছি এবং ভবিষ্যতেও করব। তাই একটি ভুলের কারনে তোমার মত এত মূল্যবান কর্মীকে আমরা হারাতে পারি না। "
ম্যানেজারের মনে একধরনের স্বস্তি আসল। পরর্বতী সেই একই ম্যানেজারের কারনে কোম্পানি মিলিয়ন ডলারের মুনাফা করে।
এই গল্পটি থেকে আমি যা শিখেছি সেটি হল, একজন ভালো নেতা কখনো একটি ভুল দিয়ে তার কর্মীর ভাল-খারাপ বিবেচনা করে না,সে সব সময় সবদিক বিচার বিবেচনা তারপর সিদ্ধান্ত নেয়।
গল্প-২
একদিন এক সন্ন্যাসী অনেক তাড়াহুড়ুর মধ্যে ছিল তাকে একটা সেমিনারে উপস্থিত থাকতে হবে আবার এই সময়ের মধ্যে জামা কাপড়ও ধুতে হবে। এমন সময় নলে পানি আসছিল না সেটা দেখে তার আরো বিরক্ত লাগতে শুরু করল এবং সে জোরে একটা বালতিতে লাথি মারে।
এটা দেখতে পেয়ে তার চেয়ে সিনিয়র একজন সন্ন্যাসী তাকে জিজ্ঞাসা করে, "তুমি এটা কি করলে! তুমি বালতিতে কেন লাথি দিলে ? "
সে উত্তর দিল, "এটা ত একটা সাধারন বালতি এর ত আর ব্যাথা লাগে না।"
সেই সিনিয়র সন্ন্যাসী তাকে উত্তর দিল,"আজ তোমার রাগের স্বীকার হল এই সাধারন বালতিটি কিন্তু কালকে যে, তোমার এই রাগের স্বীকার তোমার কোন প্রিয়জন হবে না তার কি কোন নিশ্চয়তা আছে। তাই নিজের রাগকে নিজের মধ্যে নিয়ন্ত্রনে রাখার চেষ্টা কর "
গল্প -৩
মৃত্যুর পর এক লোক ঈশ্বরের কাছে গিয়ে বলে, "আমার একটা ইচ্ছা হল, আমি স্বর্গ এবং নরক দুটোই ঘুরে দেখতে চাই। "
ঈশ্বর তখন বলল, "ঠিক আছে তোমাকে প্রথমে নরকে নিয়ে যাই।"
নরকে গিয়ে লোকটি দেখল, চারিদিকে অনেক খাবারের সমাহার কিন্তু এত খাবার থাকা সত্তেও সেখানকার প্রতিটি মানুষ রুগ্ন এবং হতাশ। সেখানে খাবার খাওয়ার নিয়ম হল প্রত্যেককে লম্বা চামচ দিয়ে খেতে হবে। এখন লম্বা চামচ দিয়ে খাবার খাওয়ার সময় মুখে তোলবার আগেই সব খাবার পরে যেত। শত চেষ্টার পরও তারা খাবার খেতে পারত না। ফলে তারা অভুক্ত এবং হতাশ থাকত।
এইবার লোকটিকে ঈশ্বর স্বর্গে নিয়ে গেল, সেখানে গিয়েও সে দেখলো চারিদিকে অনেক খাবার এবং খেতেও হবে লম্বা চামচ দিয়ে। কিন্তু তারপরও সেখানকার মানুষ অনেক স্বাস্থ্যবান এবং অনেক সুখী। এটা কীভাবে সম্ভব। তারা যখন খাবার খাচ্ছিল ঐ লোকটি একটি জিনিষ খেয়াল করল যে তারা কেউ নিজের খাবার নিজে খাচ্ছে না। তারা লম্বা চামচ দিয়ে একে অন্যকে খাইয়ে দিচ্ছে। যার ফলে তারা সকলেই ভরপেট সুস্বাদু খাবার উপভোগ করতে পারত এবং একে অন্যকে খাইয়ে দেবার কারনে নিজেদের মধ্যে সম্প্রীতি বজায় থাকত।
আমি যা শিখেছি
যখন আপনি কেবল নিজের জন্য চিন্তা করবেন তখন দিন শেষে আপনি কিছুই পাবেন না। কিন্তু আপনি যদি সকলের জন্য চিন্তা করেন তবে স্বর্গ সুখ এখানেই ভোগ করবেন।
এই ছিল আমার পড়া প্রিয় তিনটি গল্প। আপনাদের প্রিয় যদি কোন গল্প থাকে তবে শেয়ার করতে পারেন আমাদের সাথে। আপনার প্রিয় গল্পও আমরা এখানে শেয়ার করব। কমেন্ট করুন এই গল্প গুলো পড়ার পর আপনার অভিমত কি?
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন