The 7 day start up বইয়ের বাংলা সামারি




"যতক্ষন না পর্যন্ত আপনি নিজে ব্যবসা শুরু না করছেন। ততক্ষন পর্যন্ত আপনি ব্যবসার কিছুই শিখতে পারবেন না।"

কথাটি 7 days start up বইয়ের লেখক Dan Norris এর।

তার লেখা এই বইটি সকল নতুন উদোক্তাদের অবশ্যই পড়া উচিত। এই বইয়ের সবচেয়ে বেস্ট নলেজগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করব। যাতে করে বই না পড়েও আপনি ভাল ভাল নলেজগুলো পেতে পারেন। 

So let's start.

অথর ড্যান নরিস যিনি নিজে ৭ বছর বিভিন্ন স্টার্ট আপ নিয়ে কাজ করেছেন। বর্তমানে তিনি WpCurve নামক একটি কোম্পানির মালিক। 

তার সফর শুরু হয় একটি চাকরি থেকে। অন্যের অধীনে থেকে কাজ করতে করতে তার মধ্যে একধরনের বিরক্তি চলে আসে। 

তাই সে নিজেই একদিন নিজের ব্যবসা শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয়। সে তার চাকরি ছেড়ে বিভিন্ন ব্যবসা করা শুরু করে। প্রতিটিতে ব্যর্থ হবার পর। তার সকল জমানো টাকা একসময় শেষ হয়ে যায়। এবং সে আবার চাকরিতে ফেরার সিদ্ধান্ত নেয়। 

চাকরিতে জয়েন করার ৭ দিন আগে সে সর্বশেষ আরেকটি ব্যবসার প্রয়াস করে। আর তার এই শেষ প্রচেষ্টাটি আজকের Wpcurve। যেটি বর্তমানে ৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ইনকাম করে প্রতিবছর। 

অথর বলে যে যেকোন স্টার্ট আপ বর্তমান যুগে মাত্র ৭ দিনের মধ্যে চালু করা সম্ভব। 

তাই আজকের এই বুক সামারি ব্লগে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব ৭ দিনে কীভাবে একটি স্টার্ট আপ চালু করতে পারবেন। 

প্রতিদিনের টাস্ক গুলোকে উল্লেখ করে।

১ম দিন 

আইডিয়া : 

আজ পর্যন্ত যত গুলো স্টার্ট আপ এবং বিজনেসের উপড় বেস্ট সেলার বই পড়েছি। সবগুলো বইয়ে একটি জিনিষ কমন ছিল আর সেটা হল সবার প্রথম ভাল একটি আইডিয়া দরকার। 

 তা নিজেরও হতে পারে আবার আরেক জনেরও হতে পারে। একই কথা এই বইয়েও বলা হয়েছে। এই বইয়ে আইডিয়া নিয়ে ৯ টি উপাদানের কথা বলা হয়েছে। সেগুলো হল  

1. Enjoyable The daily Task : এমন আইডিয়া সিলেক্ট করুন যেটাতে কাজ করতে আপনার ভাল লাগবে।

2.Scalable Business Model: ব্যবসার মডেল এমন বানান যেটা আপনি চাইলেই যেকোন সময় বড় করতে পারবেন।

3.Built an asset : আইডিয়া এমন হওয়া চাই যেটাকে আপনি ভবিষ্যতে সম্পদের মত বিক্রি করতে পারবেন।

4. Work without founder: পৃথিবীর সবচেয়ে বড় B2B ইকমার্স সাইট আলিবাবার প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মা সম্প্রতি আলিবাবার থেকে অবসর নিয়েছে। কিন্তু তার আলিবাবা তাকে ছাড়া দিব্যি চলছে। 

কারন সে এমন এক আইডিয়ার উদ্ভাবন করেছে। যেখানে সে যদি নাও থাকে তারপরও তার প্রতিষ্ঠান চলবে। 

তাই আপনার আইডিয়াও যেন একটা সময় পর আপনাকে ছাড়াও চলতে পারে। 

5.Product Founder Fit : এমন আইডিয়া সিলেক্ট করুন যেটা সম্পর্কে আপনার ভাল ধারনা থাকে। ওয়ারেন বাফেটের একটি বিখ্যাত উক্তি আছে 'যে ব্যবসা সম্পর্কে আমার কোন ধারনা নেই। সেই ব্যবসায় আমি বিনিয়োগ করি না '

6.Tap pain and pleasure: আপনার আইডিয়া হয় ক্রেতার পেইন কমাবে অথবা তার খুশি বাড়াবে। যেমন বাইরে গিয়ে শপিং করার পেইন দূর করে দিয়েছে আমাজন। আর আপনার খুশিকে আরো বেশি বাড়াতে কাজ করে যাচ্ছে ক্যাডবেরি।

7. Market potential : আপনার আইডিয়ার জন্য মানুষ যেন টাকা পে করে। মানে আপনার আইডিয়ার অবশ্যই যেন বাজারে চাহিদা থাকে

8. Ability to launch :আইডিয়া যেন দ্রুত বাস্তবায়ন করা যায়।

9.Unique Lead Generation : এমন কিছু নতুনত্ব নিয়ে আসুন যা আপনার আইডিয়ার প্রতি মানুষকে আকৃষ্ট করে।


 এখন যে আইডিয়াতে এই ৯ টি উপাদানের মধ্যে বেশিরভাগ উপাদান গুলো থাকবে। সেই আইডিয়া নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করুন।

২য় দিন 

আপনার আইডিয়ার একটি বাস্তব রূপ দিন :

আপনার পন্য বা সার্ভিসের একটি ডেমো ভার্শন বা প্রোটটাইপ বানান যেটা আপনি ৭ ম দিন বাজারে ছাড়বেন।

৩য় দিন :

 নাম :

আপনার আইডিয়াটির একটি নাম দিন। যেটা দিয়ে পুরো দুনিয়ার মানুষ আপনার আইডিয়াটিকে চিনবে। তবে নাম বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কয়েকটা বিষয় খেয়াল রাখবেন।

১.যেই নাম ব্যবহার করবেন সেই নামের যেন ডোমেইন নেম এভেইলেভল থাকে।

২.সহজে উচ্চারন করা যায় এমন নাম পছন্দ করুন।

৩.নাম যেন বেশি বড় না হয়। বিশ্বের শীর্ষ কোম্পানি গুলোর নামে ১২ টির বেশি অক্ষর থাকে না।

৪. এমন নাম সিলেক্ট করুন যেটা আরো অন্যান্য ফিল্ডকে প্রতিনিধিত্ব করতে পারে। যেমন হানিফ পরিবহন সেটা শুধু পরিবহন খাতকেই রিপ্রেসেন্ট করে। আপনি চাইলেও হানিফ পরিবহন নামে জুস বানাতে পারবেন না।

৫. নাম আপনার আইডিয়াকে যেন রিপ্রেসেন্ট করে। তবে এক্ষেত্রে কোন বাধ্যবাধকতা নেই।

৪ র্থ দিন 

ওয়েবসাইট : 

নিজের একটি ওয়েবসাইট খুলুন। কারন একমাত্র আপনার এই ওয়েবসাইটটি পুরো দুনিয়াতে আপনার পন্যের প্রচার করবে।

এই ওয়েবসাইট যেন অবশ্যই কাস্টমারের ইমেইল কালেক্ট করে।

 সেখানে থাকবে একটি লেন্ডিং পেইজ। লেন্ডিং পেইজ বলতে বুঝায় একটি ওয়েবসাইটের প্রথম পেইজ।

 কিছু টাকা খরচ করে একটা ওয়েবসাইট বানিয়ে নিতে পারেন। আর যদি সেটাও না করতে চান তবে ওয়ার্ড প্রেস দিয়ে নিজেই একটি ওয়েবসাইট বানিয়ে নিন।

৫ম দিন

 মার্কেটিং :

বর্তমান যুগে সবচেয়ে সহজ এবং কম খরুচে মার্কেটিং টেকনিক হল কনটেন্ট বানিয়ে বিভিন্ন সোশাল মিডিয়াতে পোস্ট করা। 

আপনি যে সমস্যা সমাধান করার জন্য আইডিয়াটি শুরু করেছেন। সেই সমস্যা সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য দিয়ে কনটেন্ট বানান। 

যেগুলো আপনার ক্রেতার জন্য উপকারী হবে। বিভিন্ন মাধ্যমে আপনি সেই কনটেন্ট গুলো আপলোড করতে পারেন। যেমন

ব্লগিং: যেখানে কনটেন্ট গুলো লিখতে পারেন।

ভিডিও : ভিডিও আকারে কনটেন্ট গুলো ইউটিউব, টিকটক, ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করতে পারেন।

পোডকাস্ট : অডিও আকারে কনটেন্ট গুলো প্রকাশ করতে পারেন।

ই বুকস : কনটেন্ট গুলোকে ইবুকস আকারে প্রকাশ করুন।

এইসব টেকনিক গুলো ব্যবহার করে আপনি আপনার পন্যের মার্কেটিং করতে পারবেন।


৬ষ্ঠ দিন 

সেট টার্গেট : 

এই দিন আপনি বাজেট করবেন যে ১ মাসের মধ্যে  আপনি ঠিক কতজন মানুষের কাছে পন্য বিক্রি করবেন, কতজন মানুষ আপনার ওয়েব সাইটে সাইন আপ করবে,কত টাকা খরচ হবে,কত টাকা আয় করবেন ইত্যাদি। 

অথর ড্যান যখন তার Wp curve লঞ্চ করে। তখন প্রথম মাসে সে ১০ জন কে সাইন আপ করানোর টার্গেট সেট করে। সেখান থেকে সে ৫০০ $ ইনকাম করবে। 

আপনিও এইরকম ধরনের টার্গেট সেট করতে পারেন।

৭ম দিন : 

পন্য প্রকাশ 

এই দিন আপনি আপনার কাস্টমারের সামনে আপনার প্রডাক্ট নিয়ে আসবেন বিক্রি করার জন্য। 

লঞ্চ করার পর কাস্টমারের ফিডব্যাক নিয়ে আস্তে আস্তে প্রন্য ইম্প্রুভ করুন।

কারন একটি প্রডাক্ট বা সার্ভিস তখনই পার্ফেক্ট হয় যখন কাস্টমার সে পন্য বা সার্ভিসের উপড়  নিজের ফিডব্যাক দেয় এবং সে অনুযায়ী পন্য ইম্প্রুভ করা হয়। 

এই ছিল কিছু স্টেপস যেগুলো ব্যবহার করে আপনি আপনার ড্রিম আইডিয়া নিয়ে কাজ করা শুরু করতে পারবেন মাত্র ৭ দিনের মধ্যে।





মন্তব্যসমূহ